আবর্জনা ঘরেই সাজিয়ে রাখতেন!!

প্রকাশঃ জুন ১৫, ২০১৫ সময়ঃ ৯:৩২ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডট কম:

Not-home,trash-cansকঙ্কাল রহস্যের জাল ভেদ করতে না করতেই নতুন করে শিরোনামে এলো দক্ষিণ কলকাতার এক অভিজাত এলাকা৷ রোববার গল্ফগ্রিনে একটি আবাসনের বাসিন্দাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়ে এক বিচিত্র পরিবারের সন্ধান পায় পুলিশ। ওই আবাসনের তিন তলার একটি ফ্ল্যাট খুলে পুলিশ দেখে, ঘরের মেঝে থেকে সিলিং পর্যন্ত সবখানে থরে থরে সাজানো আবর্জনা! যেন বড়সড় একটি ডাস্টবিন!

তার মধ্যেই বসবাস করছে মা ও ছেলে৷ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্থান থেকে ছেলে আবর্জনা কুড়িয়ে আনতেন, আর মা সেই আবর্জনা সাজিয়ে রাখতেন ঘরে!

১৯৮৫ সাল থেকে গল্ফগ্রিনের ফেজ ৪-এ শ্যামলিমা হাউজিংয়ের তিন তলায় থাকেন নীহাররঞ্জন সাহা (৭৫) এবং অনিতা সাহা (৬০)৷ ব্যাঙ্ক কর্মকর্তা নীহাররঞ্জন অবসর নেন ২০০০ সালে৷ তাদেরই ছেলে সন্দীপ (৩৫)৷

সন্দীপের এমন অস্বাভাবিক আচরণ শুরু হয় ২০০৮ সাল থেকে৷ স্ত্রী ও পুত্রের এহেন আচরণে বিরক্ত হয়ে বছর তিনেক আগে ওই ফ্ল্যাট ছেড়ে দেন নীহারবাবু৷তারপর থেকে কখনো ফুটপাথ, কখনো স্থানীয় লাইব্রেরি, কখনো আবার পাড়ার কমিউনিটি হলে রাত কাটিয়েছেন তিনি৷ স্থানীয় বাসিন্দারাও ধীরে ধীরে বুঝতে পারেন এই অস্বাভাবিকত্বের কথা৷ তারাই পাড়ার মেডিক্যাল সেন্টারে একটি কাজ জুটিয়ে দেন নীহারবাবুকে৷ প্রতিবেশীদের সহায়তায় ওই আবাসন কমপ্লেক্সেরই একটি এক কামরার ফ্ল্যাটে এখন সাময়িকভাবে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি৷

সন্দীপ একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরী করেন৷ সেখানকার এক কর্মকর্তা সন্দীপের এমন সমস্যার কথা শুনেছেন বলে জানান৷ তবে তার ব্যবহারে কোনো অস্বাভাবিকত্ব দেখতে পাননি তিনি৷

অষ্টম শ্রেণীর পর পড়াশোনা ছেড়ে দেন সন্দীপ৷ স্বভাবে অন্তর্মুখী সন্দীপ কারো সাথে তেমন মেলামেশা করেন না৷ প্রতিবেশীদের দাবি, অনিতাদেবী মুখরা স্বভাবের হলেও নিয়মিত বাড়ি থেকে বের হতেন৷ কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে ওই ফ্ল্যাটে কোনো আলো জ্বলতো না। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ নোংরা কুড়োনোর ব্যাগ এবং গলায় রংবেরঙের রুমাল বেঁধে সন্দীপ বের হতেন, বাড়ি ফিরতেন অনেক রাত করে৷ আরো অদ্ভুত ব্যাপার, বেশিরভাগ দিনই নীহারবাবু রান্না করে স্ত্রী-ছেলের কাছে পাঠিয়ে দিতেন।

গতকাল সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘরে জমানো ময়লার দুর্গন্ধ সহ্য করতে না পেরে পুলিশ ও স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্তকে খবর দেন৷ সন্দীপবাবুদের নীচের তলাতেই থাকেন সুসীমকুমার রায় ও রেখা রায়৷ আগে কেন পুলিশকে বলেননি জানতে চাইলে সুসীমবাবুর বক্তব্য, ‘আমরা অনেকবার ওদের বারণ করেছি৷ ইদানীং তো মরা জীবজন্তুও ঘরে রাখা শুরু করেছিলেন ওরা৷ এলাকার বিভিন্ন ডাস্টবিন থেকে সন্দীপকে নোংরা কুড়োতেও দেখেছি আমরা৷’ সূত্র: এই সময়।

প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G